You are reading tafsir of 9 ayahs: 73:1 to 73:9.
নামকরণঃ الْمُزَّمِّلُ শব্দের অর্থ :
বস্ত্রাবৃত, আর এর পরবর্তী সূরা الْمُدَّثِّرُ অর্থও বস্ত্রাবৃত, বস্ত্রাচ্ছাদিত। বস্ত্রাবৃত ব্যক্তি দ্বারা উদ্দেশ্য হল নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হেরা গুহায় অবস্থানকালে তাঁর ওপর সূরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত অবতীর্ণ হয়। তারপর দীর্ঘদিন ওয়াহী আগমন বন্ধ থাকার পর ধারাবাহিক পুনঃআগমন শুরু হয়। একদা তিনি হেরা গুহার পাশ দিয়ে অতিক্রমকালে বিকট আওয়াজ শুনতে পান। আকাশের দিকে মাথা তুলে দেখতে পান সেই ফেরেশতা যিনি হেরা গুহায় এসেছিলেন, তিনি আকাশ-জমিনের মধ্যবর্তী একটি চেয়ারে বসে আছেন। এতে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বাড়িতে ফিরে এসে স্ত্রী খাদিজা (রাঃ)-কে বলেন : আমাকে চাদর দ্বারা আবৃত করে দাও। আমি নিজের প্রতি শঙ্কিত। তখন সূরা মুদ্দাসসির অবতীর্ণ হয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নির্দেশ দেওয়া হয় যে, তিনি যেন মানুষকে আখিরাতের ভয়াবহ শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করেন এবং এর মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রিসালাত জীবন শুরু হয়। এর পরে অথবা আগে সূরা মুযযাম্মিল নাযিল হয়। সূরার প্রথম আয়াতে উল্লিখিত الْمُزَّمِّلُ শব্দ থেকে এ নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : আমার খালা [রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী] মায়মূনা (রাঃ)-এর ঘরে একদা আমি রাত্রি যাপন করলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে সালাত আদায় করার জন্য উঠলেন। তিনি তের রাকাত সালাত আদায় করলেন, তার মধ্যে ফজরের দু’রাকাত সুন্নাত। আমি তার প্রত্যেক রাকাতের দাঁড়ানোর পরিমাণ হিসেব করলাম যে, তা ছিল
يَا أَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ
এ সূরার লম্বা সমপরিমাণ। (আবূ দাঊদ হা. ১৩৬৫, সহীহ)।
১-৯ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি নবুওয়াতের গুরু দায়িত্ব অর্পণ করার পূর্বে তাঁকে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দায়িত্ব পালনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশস্বরূপ অর্ধ-রাত সালাত আদায় করার নির্দেশ দিয়ে বলছেন- ওঠো, ঘুম ও বিশ্রামের সময় আর নেই। এ দায়িত্বের জন্য প্রস্তুতি নাও। এটা একটি গুরুতর নির্দেশ। কারণ যে ব্যক্তি কেবল নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত তার পক্ষে আরাম-আয়েশ ও নরম বিছানায় জীবন কাটানো সম্ভব হলেও যে ব্যক্তি সারা পৃথিবীর জন্য প্রেরিত, যার প্রতি মহৎ দায়িত্ব তার ঘুম আসে কি করে? আরাম-আয়েশে জীবন-যাপন কিভাবে সম্ভব?
(قُمِ اللَّيْلَ إِلَّا قَلِيْلًا)
আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রাতের কিছু অংশ ব্যতীত বাকি রাত কিয়াম (তাহাজ্জুদ) করার নির্দেশ প্রদান করছেন। إِلَّا قَلِيْلًا ‘রাতের কিছু অংশ ব্যতীত’ এর তাফসীর পরের দু‘আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা নিজেই উল্লেখ করেছেন। তাহল : ‘তার অর্ধেক কিংবা তদপেক্ষা কিছু কম। অথবা তদপেক্ষা বেশি।’ অর্থাৎ অর্ধ-রাত পর্যন্ত বা তার কম কিম্বা তার চেয়ে বেশি রাত কিয়াম কর, বাকি রাত ঘুমাও। অর্ধ-রাতের কিছু কম-বেশি হলে কোন অসুবিধা নেই। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশকে বাস্তবায়িত করত অর্ধ-রাত সালাত আদায় করতেন। এটা তাঁর ওপর ফরয ছিল। যেমন অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَمِنَ الَّیْلِ فَتَھَجَّدْ بِھ۪ نَافِلَةً لَّکَﺣ عَسٰٓی اَنْ یَّبْعَثَکَ رَبُّکَ مَقَامًا مَّحْمُوْدًا)
“এবং রাত্রির কিছু অংশে তাহাজ্জুদ কায়েম কর, এটা তোমার জন্য এক অতিরিক্ত কর্তব্য। আশা করা যায় তোমার প্রতিপালক তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন প্রশংসিত স্থানে।” আয়াতে এবং রাত্রির কিছু অংশের পরিমাণ এ আয়াতদ্বয়ে বলে দেওয়া হল। (ইবনু কাসীর)
আল্লামা শাওকানী (রহঃ) বলেন : আয়াতটি রহিত হয়ে গেছে। তবে কোন্ আয়াত একে রহিত করেছে তা নিয়ে কয়েকটি মত পাওয়া যায়। যেমন কেউ বলেছেন : অত্র সূরার ২০ নম্বর আয়াত।
কেউ বলেছেন :
(عَلِمَ أَنْ لَّنْ تُحْصُوْهُ)
“তিনি জানেন যে, তোমরা কখনও এর সঠিক হিসাব রাখতে পারবে না।” আবার কেউ বলেছেন : ফরয পাঁচ ওয়াক্ত সালাত রহিত করে দিয়েছে। এ কথা বলেছেন মুকাতিল, ইমাম শাফেয়ী ও ইবনু কায়সান। ( ফাতহুল কাদীর)।
সা‘দ বিন হিশাম বলেন : আয়িশাহ (রাঃ)-কে বললাম : রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রাতের কিয়াম সম্পর্কে আমাকে বলুন। তিনি বললেন : তুমি কি সূরা মুযযাম্মিল পড়নি? আমি বললাম হ্যাঁ, পড়েছি। তিনি বললেন : এ সূরার শুরুতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ওপর কিয়ামূল লাইল (রাতের সালাত) ফরয করে দেন। ফলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর পার্শ্বের সাহাবীরাও রাতে সালাত আদায় করতো ফলে তাদের পা ফুলে যেত। বার মাস পর এ সূরার শেষের আয়াতগুলো অবতীর্ণ হয় এবং আল্লাহ তা‘আলা এ ফরযকে হালকা করে দেন। ফলে রাতের সালাত ফরযের পর নফল থেকে যায়। (সহীহ মুসলিম : ৭৪৬, আবূ দাঊদ হা. ১৩৪২) এসত্ত্বেও নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে নিয়মিত তাহাজ্জুত সালাত আদায় করতেন।
(وَرَتِّلِ الْقُرْاٰنَ تَرْتِيْلًا)
অর্থাৎ কুরআন তেলাওয়াত কর ধীরে ধীরে, সুস্পষ্ট ও সুন্দরভাবে, যাতে ভালভাবে বুঝতে পারা যায়। বিশিষ্ট তাবেয়ী যহহাক (রহঃ) বলেন : কুরআনের প্রত্যেকটি অক্ষর স্পষ্ট উচ্চারণ করে পড়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ও কুরআনকে তারতীল বা সুস্পষ্টভাবে প্রত্যেকটি অক্ষর সস্থান থেকে উচ্চারণ করে পড়তেন। আয়িশাহ (রাঃ) বলেন : রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরআন খুবই ধীরে ধীরে ও থেমে থেমে তেলাওয়াত করতেন। ফলে খুব দেরীতে সূরা শেষ হতো। ছোট সূরাও যেন বড় হয়ে যেত। উম্মু সালামাহ (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কিরাআত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন : তিনি কুরআনের প্রত্যেকটি আয়াত থেমে থেমে তেলাওয়াত করতেন। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : কিয়ামতের দিন কুরআন তেলাওয়াতকারীদেরকে বলা হবে- তুমি পড় এবং ওপরে উঠতে থাক, দুনিয়াতে তুমি যেমন তারতীলের সাথে তেলাওয়াত করতে এখনও সেরূপ তারতীলের সাথে তেলাওয়াত কর। কেননা যে জায়গায় তুমি আয়াত পড়ে শেষ করবে সেখানে তোমার ঠিকানা। (আবূ দাঊদ হা. ১৪৬৪, তিরমিযী হা. ২৯১৪, হাসান সহীহ)
অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন :
زَيِّنُوا الْقُرْآنَ بِأَصْوَاتِكُمْ
তোমাদের সুর দ্বারা কুরআনকে সৌন্দর্যমণ্ডিত কর। (আবূ দাঊদ হা. ১৪৬৮, ইবনু মাযাহ হা. ১৩৪২, সিলসিলা সহীহাহ হা. ৭৭১)
তাই কুরআনকে ধীরে ধীরে মাখরাজের সস্থান থেকে উচ্চারণ করে পড়া উচিত। মন্ত্রের মত খতম করার জন্য পড়া আদৌ উচিত না।
(قَوْلًا ثَقِيْلًا)
রাতের সালাত সাধারণত আদায় করা ভারী ও কষ্টকর। এখানে আল্লাহ তা‘আলা পূর্বের বাক্যের সাথে সম্পর্কহীন বাক্য
(جملة معترضة)
স্বরূপ বললেন : আমি এর চেয়েও বেশি ভারী কথা তোমার ওপর অবতীর্ণ করব। তা হল : কুরআনুল কারীম। যার বিধি বিধানের ওপর আমল করা, তার দিকে দাওয়াত দেওয়া খুব কঠিন ও ভারী কাজ। কেউ বলেছেন : যেমন যায়েদ বিন সাবেত বলেন : রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট যখন ওয়াহী অবতীর্ণ হয় তখন তার উরু আমার উরুর ওপর ছিল। ওয়াহীর ভারীতে যেন আমার উরু ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছিল। (সহীহ বুখারী হা. ২৮৩২) ওয়াহী অবতীর্ণ হলে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কপাল ঘেমে যেত। (সহীহ বুখারী হা. ২)
(إِنَّ نَاشِئَةَ اللَّيْلِ) - نَاشِئَةَ
শব্দটি হাবশী, অর্থ হল : জাগরণ করা।
وَطْئًا অর্থ সমান করা, পদদলন। একটি বস্তু অন্যটির মাঝে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া। আয়াতের ভাবার্থ হল : রাতের সালাত উত্তম এজন্য যে, এর ফলে অন্তর ও রসনা এক হয়ে যায়। তেলাওয়াত করার কারণে মুখ দিয়ে যে সকল শব্দ উচ্চারিত হয় তা অন্তরে বদ্ধমূল হয়ে যায়। দিনের তুলনায় রাত্রির নির্জনতায় অর্থ ও ভাব অন্তরে ভালভাবে গেঁথে যায়।
(سَبْحًا طَوِيْلًا) سَبْح-
অর্থ চলা ও ঘোরাফেরা করা। অর্থাৎ মানুষের দিনের বেলায় বহু কর্মব্যস্ততা থাকে, এদিক-সেদিক যেতে হয়, বিভিন্ন কাজ থাকে ফলে ইবাদতের জন্য যথাযথ সময় দিতে পারে না। সেহেতু রাতের বেলা সালাত আদায় ও তাতে কুরআন তেলাওয়াতের এক উপযুক্ত সময়, তাই রাতের কিয়দাংশ সালাত আদায় কর।
(وَاذْكُرِ اسْمَ رَبِّكَ)
‘সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের নাম স্মরণ কর’ এতে সকল প্রকার যিকির শামিল। সালাত, কিয়াম, সালাতের আগে ও পরের দু‘আ ইত্যাদি।
(وَتَبَتَّلْ إِلَيْهِ تَبْتِيْلًا) – تَبَتَّلْ
অর্থ : পৃথক ও আলাদা হয়ে যাওয়া। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করার নিমিত্তে দুনিয়ার ব্যস্ততা থেকে মুক্ত হওয়ার পর আলাদা হয়ে যাও। এটি বৈরাগ্যতা নয়। কেননা বৈরাগ্যতা হল : দুনিয়া থেকে সাংসারিক ব্যস্ততাসহ সকল কিছু বর্জন করা। আর এরূপ বৈরাগ্যবাদ ইসলামে নিষেধ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করতেন, আবার বিবাহ করে সংসার গড়েছেন, রোযা রাখতেন আবার রোযা ছাড়তেন, রাতে সালাত আদায় করতেন আবার ঘুমাতেন। এটাই সুন্নাত তরিকা। অতএব এ তরিকা বর্জন করে অন্য তরিকা গ্রহণ করা সম্পূর্ণ শরীয়ত গর্হিত কাজ। কখনো এমন আমল আল্লাহ তা‘আলার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। (সহীহ বুখারী হা. ৫০৬৩)
তাই পার্থিব কর্ম ব্যস্ততার পাশাপাশি সময়-সুযোগ করে নিয়ে একাগ্রচিত্তে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করা প্রশংসনীয়। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতসহ যখন কোন আমল করতেন তখন তা নিয়মিত করার চেষ্টা করতেন। যদি রাতে ঘুমের কারণে অথবা অসুস্থতার কারণে তাহজ্জুত আদায় না করতে পারতেন তাহলে দিনে বার রাকাত আদায় করে নিতেন। তবে কখনো তিনি একরাতে কুরআন শেষ করেননি এবং সারা রাত জাগেননি, রমযান ছাড়া অন্য কোন পূর্ণমাস সিয়াম পালন করেননি। (সহীহ ইবনু খুযাইমাহ হা. ১১৭৭)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফজরের সুন্নাতসহ তের রাকাতের বেশি রাতের সলাত আদায় করতেন না।
২. ধীরস্থিরতাসহ লম্বা কিরাআতে রাতের সালাত আদায় করা উত্তম।
৩. রাতের সালাত আল্লাহ তা‘আলার কাছে খুবই প্রিয়।
৪. কুরআনকে মন্ত্রের মত না পড়ে সুন্দরভাবে প্রতিটি অক্ষর তার মাখরাজ থেকে উচ্চারণ করা আবশ্যক।
৫. ইসলামে বৈরাগ্যতা নিষেধ। তবে অবশ্যই ইবাদতের ব্যাপারে সচেতন এবং একাগ্রতা থাকা উচিত।
QUL supports exporting tafsir content in both JSON and SQLite formats.
Tafsir text may include <html> tags for formatting such as <b>,
<i>, etc.
Note:
Tafsir content may span multiple ayahs. QUL exports both the tafsir text and the ayahs it applies to.
Example JSON Format:
{
"2:3": {
"text": "tafisr text.",
"ayah_keys": ["2:3", "2:4"]
},
"2:4": "2:3"
}
"ayah_key" in "surah:ayah", e.g. "2:3" means
3rd ayah of Surah Al-Baqarah.
text: the tafsir content (can include HTML)ayah_keys: an array of ayah keys this tafsir applies toayah_key where the tafsir text can be found.
ayah_key: the ayah for which this record applies.group_ayah_key: the ayah key that contains the main tafsir text (used for shared tafsir).
from_ayah / to_ayah: start and end ayah keys for convenience (optional).ayah_keys: comma-separated list of all ayah keys that this tafsir covers.text: tafsir text. If blank, use the text from the group_ayah_key.