You are reading tafsir of 6 ayahs: 69:38 to 69:43.
৩৮-৪৩ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় সৃষ্ট বস্তুর মধ্য হতে ঐ সব নিদর্শনের শপথ করছেন যেগুলো মানুষ দেখতে পায় আর যেগুলো দেখতে পায় না উভয়ের। তিনি শপথ করে বলছেন : এ কুরআন তাঁর বাণী যা স্বীয় বান্দা ও রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর অবতীর্ণ করেছেন, যাকে তিনি আমানত আদায় ও রিসালাত প্রচারের জন্য পছন্দ ও মনোনীত করেছেন।
رسول كريم
দ্বারা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বুঝোনো হয়েছে। কারণ তিনি এর প্রচারক ও উপস্থাপক। এজন্য رسول বা দূত শব্দটি আনা হয়েছে। কেননা রাসূল কেবল তাঁর কথা প্রচার করেন যিনি তাঁকে প্রেরণ করেছেন। এজন্য জিবরীলের দিকেও এ
কুরআনের সম্বন্ধ লাগানো হয়েছে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(إِنَّهُ لَقَوْلُ رَسُولٍ كَرِيمٍ ذِي قُوَّةٍ عِنْدَ ذِي الْعَرْشِ مَكِينٍ مُطَاعٍ ثَمَّ أَمِينٍ)
“নিশ্চয়ই এই কুরআন সম্মানিত বার্তাবাহকের আনীত বাণী, সে শক্তিশালী আরশের মালিকের নিকট মর্যাদাসম্পন্ন, সেখানে তাঁকে মান্য করা হয় এবং সে বিশ্বাস ভাজন। ” (সূরা তাকভীর ৮১ : ১৯-২১)
তাই আল্লাহ তা‘আলা কুরআনকে কখনো ফেরেশতা রাসূল জিবরীলের দিকে সম্পৃক্ত করেছেন আবার কখনো মানুষ রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দিকে সম্পৃক্ত করেছেন। কারণ উভয়েই আল্লাহ তা‘আলার কথার প্রচারক। জিবরীল প্রচার করেন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে, আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রচার করেন মানুষের কাছে। তাই এ কুরআন কোন গণক, জ্যোতিষী বা মানুষের তৈরি কথা নয় বরং তা নিঃসন্দেহে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত কিতাব।
কুরআন ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে কাফিররা যেসব অপবাদ দিত তার মধ্যে এও ছিল যে, তারা তাকে কবি ও জ্যোতিষী বলতো। কারণ কুরআনের ভাষা সাধারণ মানবীয় ভাষার তুলনায় অনেক উঁচু মানের হওয়ার কারণে তারা এরূপ সন্দেহ করত। তাদের মাঝে এরূপ কুসংস্কার প্রচলিত ছিল যে, কবি ও জ্যোতিষীর অধীন একটা জিন থাকে, সে তাকে উঁচু মানের ভাষা শেখায় এবং অজ্ঞাত অজ্ঞাত তথ্য সরবরাহ করে। অথচ কুরআন ও নবুওয়াতের প্রকৃতি এবং কবি ও জ্যোতিষীর প্রকৃতির মাঝে আকাশ-জমিন পার্থক্য বিদ্যমান। কবিতার সুরেলা ছন্দ, অভিনব চিন্তা এবং তাতে চমকপ্রদ দৃশ্য ও ছবির সমাবেশ ঘটতে পারে। কিন্তু সে জন্য তা কুরআনের মত হতে পারে না। কেননা কুরআন হল জীবনের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা, চিরন্তন সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং কথার কোন বৈপরিত্য নেই। পক্ষান্তরে কবিতা হল ধারাবাহিকভাবে উদ্ভুত প্রতিক্রিয়া এবং উদ্বেলিত ও উচ্ছ্বসিত ভাবাবেগের নাম। এতে স্থীতিশীলতা ও দৃঢ়তা অত্যন্ত কম। আনন্দ-বেদনা, ঘৃণা বিদ্বেষ ও প্রীতি ভালবাসা, সন্তোষ ও ক্রোধ এবং সুখ ও দুঃখ প্রভৃতি পরিবর্তনশীল অবস্থায় কবিতা কখনো একই মত ও দৃষ্টিভংগীর ওপর স্থির থাকে না। অনুরূপ জ্যোতির্বিদ্যার ক্ষেত্রে একই কথা। ইতিহাসের প্রাচীন কিংবা আধুনিক কোন যুগেই এমন কোন জ্যোতিষীর সাক্ষাত মেলেনি যে, কুরআনের বিধানের মত একটি পরিপূর্ণ, স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সমগ্র জীবনের উপযোগী বিধান রচনা করবে। পক্ষান্তরে কুরআন যে আদর্শ ও মতবাদ দিয়েছে তা আগাগোড়া খুঁটিনাটি সব ভিত্তিমূল থেকে গড়ে তুলেছে কুরআন নিজেই। তার উৎস আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং নিজে সে কথাও তিনি দ্ব্যার্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাজ্জের সময় বহিরাগত হাজীদের মাঝে ইসলামের দাওয়াত দিতেন। কিন্তু মক্কার মুশরিকরা এ দাওয়াতী কার্যক্রম থেকে বাধা দেওয়ার ফন্দি করল। অলীদ বিন মুগীরাহ তার গৃহে সলাপরামর্শের জন্য একটি বৈঠক ডাকল। অলীদ বলল : হাজীদেরকে মুহাম্মাদ দাওয়াত দিতে গেলে আমরা কী বলে তাকে হাজীদের থেকে সরাতে পারব? আমাদেরকে একটি কথার ওপর একমত হওয়া দরকার যাতে পরে মতবিরোধ না হয়। সবাই বলল আপনি একটি কথা ঠিক করে দেন। অলীদ বলল : তোমরাই বল, আমি শুনব। কেউ বলল : আমরা বলব, সে একজন গণক; আপনারা তার কথা শুনবেন না। অলীদ বলল : আল্লাহ তা‘আলার কসম! না। আমি গণকের কথা শুনেছি তার কথা গণকের কথার সাথে কোন মিল নেই। কেউ বলল : তাহলে বলব, সে পাগল। অলীদ বলল : সে পাগল নয়, আমি পাগল দেখেছি। কেউ বলল : তাহলে বলব, সে কবি। অলীদ বলল : না, সে কবিও না, আমি সব ধরনের কবিতা দেখেছি। মুহ্ম্মাাদ যা বলে কবিতার সাথে তার কোন মিল নেই। তারপর বলল : তাহলে বলব : সে জাদুকর। অলীদ বলল : না সে জাদুকরও না, আমি অনেক জাদুকর দেখেছি। অবশেষে অলীদ বলল : আল্লাহ তা‘আলার শপথ! তার কথা বড়ই মিষ্টি মধুর, তাঁর ভিত ও শিকড় বড়ই শক্ত এবং শাখা-প্রশাখা বড়ই মনোমুগ্ধকর। তোমরা তাঁর সম্পর্কে যাই বল তাঁর সংস্পর্শে যারা কিছুক্ষণ থাকবে তোমাদের কথা-বার্তাকে অবশ্যই মিথ্যা মনে করবে। (আর রাহীকূল মাখতুম)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. আল্লাহ তা‘আলা যে কারো নামে শপথ করতে পারেন, কিন্তু বান্দা আল্লাহ তা‘আলার নাম বা গুণাবলী ছাড়া অন্য কোন নামে শপথ করতে পারবে না।
২. কুরআনকে রাসূলের বাণী বলে সম্পৃক্ত করার হিকমত জানলাম।
৩. কুরআন কোন গণক, জ্যোতিষী বা মানুষের তৈরি কিতাব নয়; বরং তা নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা‘আলার বাণী।
QUL supports exporting tafsir content in both JSON and SQLite formats.
Tafsir text may include <html> tags for formatting such as <b>,
<i>, etc.
Note:
Tafsir content may span multiple ayahs. QUL exports both the tafsir text and the ayahs it applies to.
Example JSON Format:
{
"2:3": {
"text": "tafisr text.",
"ayah_keys": ["2:3", "2:4"]
},
"2:4": "2:3"
}
"ayah_key" in "surah:ayah", e.g. "2:3" means
3rd ayah of Surah Al-Baqarah.
text: the tafsir content (can include HTML)ayah_keys: an array of ayah keys this tafsir applies toayah_key where the tafsir text can be found.
ayah_key: the ayah for which this record applies.group_ayah_key: the ayah key that contains the main tafsir text (used for shared tafsir).
from_ayah / to_ayah: start and end ayah keys for convenience (optional).ayah_keys: comma-separated list of all ayah keys that this tafsir covers.text: tafsir text. If blank, use the text from the group_ayah_key.